কুষ্টিয়ার আদালতে একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় হাজিরা দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও কুষ্টিয়া-৪ আসনের সাবেক সংসসদ সদস্য সেলিম আলতাফ (জর্জ)। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুরে তারা কুষ্টিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে হাজির হন। এ সময় তাদের আইনজীবী জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করে ইনুসহ দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তবে কাঠগড়ায় জামিন শুনানির আগে ঘটে যায় অন্যরকম এক কাণ্ড। আদালতের কাঠগড়ায় হাতকড়া পরিয়ে তোলা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান হাসানুল হক ইনু ও তার আইনজীবীরা। এ নিয়ে এজলাসে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এ সময় উচ্চস্বরে ইনু বলেন, এজলাসে আসামির হাতে হাতকড়া পরানোর বিধান নেই।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরাও একযোগে হাতকড়া পরানোর বিষয়ে আপত্তি তোলেন ও তা খুলে দিতে বলেন। এ সময় দায়িত্বরত কোর্ট ইন্সপেক্টর জহুরুল আলম হাতকড়া খোলার বিষয়ে আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, এমন কিছু হলে আদালতের অনুমতি লাগবে।
একপর্যায়ে খাস কামরায় থাকা ওই আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা তাদের হাতের হাতকড়া খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। পরে ইনুর হাতে হাতকড়া খুলে দেওয়া হলেও ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এ বিষয়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রায় আধাঘণ্টা জামিন শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আকরাম হোসেন দুলাল জানান, খোদ এজলাসে হাসানুল হক ইনু এবং ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জের হাতে হাতকড়া পরানো বেআইনি। বিষয়টি নিয়ে আদালতকে আপত্তি জানিয়েছি। এটি খুবই দুঃখজনক। পরে আদালত তাদের হাতকড়া খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
অবশ্য হাতকড়া পরানোর বিষয়ে কুষ্টিয়া জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, আদালতে আসামিদের হাতে হাতকড়া পরানো বেআইনি নয়। কারণ আসামিরা পালিয়ে যেতে পারেন। হাসানুল হক ইনু এবং ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ হাতকড়া খুলে দেওয়ার যে দাবি তুলেছেন তা অযৌক্তিক।
আদালত সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্ট ছাত্রবিপ্লবের দিন কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন। মামলায় ৬৪ জনকে আসামি করে হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন তিনি। ওই মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ৩৭ এবং ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ ৩৩ নাম্বার আসামি।