
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এর সহকারী প্রধান প্রকৌশলী স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী মোঃ মোজাম্মেল হকের প্রিয় লোক প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদুল ইসলাম টেন্ডার-পদ বাণিজ্য করেই সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি অর্ধশতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। গত ৫ অগস্টের পরে তৈরি করেছেন নতুন নতুন সিন্ডিকেট। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর অন্তবর্তীনকালীন সরকার গঠনের ৬ মাস অতিবাহিত হলেও সরকারের মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এর প্রভাবশালী প্রকৌশলী ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট এখনো বহালতবিয়ত থেকে বিভিন্নরকম বৈষম্য মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সরকার সারাদেশে শুরু করেছে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’।সরকারের এই মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুশীল সমাজসহ বিশিষ্টজনেরা। বিশিষ্টজনের মতে সারাদেশে অবস্থিত সরকারি অফিসে এসি রুমে থাকা ‘ডেভিল হান্ট’ এর অনিয়ম ও দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে ও এধরণের জনকল্যাণমুখী অপারেশন করা এখন সময়ের দাবি। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী সাজ্জাদুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ও অপারেশন “ডেভিল হান্ট ” পরিচালনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, বাংলাদেশ সব টেন্ডার ইজিপি EGP হলেও এই দপ্তরের অনিয়ম করার জন্য এখনো অনলাইন ইজিপি করেন নাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এক কোটি ১৬ লাখ টাকার টেন্ডারকে নতুন করে ম্যানুয়ালি টেন্ডার দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক ঠিকাদার বলেন, কট্ররপন্থী আওয়ামী লীগের ঠিকাদারদের টেন্ডার দেয়ার জন্য ,পায়তারা করছেন ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুল ইসলাম। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে আগে থেকেই ২জন আওয়ামী লীগের নেতার কোম্পানি কে ইস্টিমেট দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের পলাতক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল করিম রেজার পার্টনার হাওলাদার এন্টারপ্রাইজ এর মালিক রেজার কাছের লোক এবং রেজা তাকে দিয়ে এই অফিসের সব কাজ করিয়েছেন। এর আগেও তাকে দিয়ে ১২ কোটি টাকার কাজ দিয়েছেন রেজার কথায়। এ লাইসেন্স আবার এখনো লিস্টের ১ নাম্বারে আছে। ৩ নাম্বারে আছে খোকন কস্ট্রাক্শন এর মালিক খোকন। তিনি স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা এবং আওয়ামী লীগের সময় অনেক কাজ ও প্রকৌশলী সাথে মিলে টেন্ডার ভাগাভাগি করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার অভিযোগ করেন অনিয়মের মাধ্যমে রেটকোট আগে দিয়ে দেন প্রকৌশলী সাজ্জাদুল ইসলাম ও তার সহযোগী ইঞ্জিনিয়ার সুমন। নতুন করে আওয়ামী লীগের লোকজনকে কাজ দেয়ার জন্যে পায়তারা করছেন। এই সাজ্জাদুল ইসলাম সরকার পতনের আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীর প্রিয় ভাজন হওয়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে অর্ধশতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। মোহাম্মদপুরে ১৩ তলা কাজের সাহাবুদ্দিন ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়েছেন। এস পারে ১২ কোটি টাকার একটা কাজ দিয়েছেন জুয়েল ঠিকাদারকে।
অভিযোগ রয়েছে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দুই-তিন দিনে খাতা-কলমে কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে ঠিকাদারদের অগ্রিম বিল পরিশোধ করে কমিশন বাণিজ্য করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সংস্থাটিতে কাজ শেষ করার পরও বিলের জন্য ঠিকাদাররা যেখানে বছরের পর বছর অফিসের বারান্দায় ঘুরছেন সেখানে কাজ না করেই অগ্রিম বিল নেওয়ার ঘটনায় অনেকেই হতবাক করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট স্বৈরাচারী পতিত সরকারের দোসর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট ও সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদুল ইসলামের খুটির জোর কোথায় ও সুমন এখনও বহাল তরিয়াতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট । শুধুমাত্র কমিশন বাণিজ্যের কারনে এই দুই কর্মকর্তা যোগসাজসে এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন হর হামেশে। বিগত সময় তাদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ থাকলেও স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রীদের ছত্র ছায়ায় সেই সকল অভিযোগ ধামাপাচা পড়ে যায় তাদের অদৃশ্য শক্তির কারণে। গত ৫ ই আগষ্ট ২০২৪ সরকার পতনের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে দফায় দফায় প্রকাশ্য মিছিল করতে দেখা যায় এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগকসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন সংগঠনকে ছাত্র আন্দোলন দমনে মোটা অংকের চাঁদা দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট সহকারী প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাজ্জাদুল ইসলামের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাদিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করনেনি। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘এই সরকার কোন অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় দেয় না’ । প্রকৌশলী সাজ্জাদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এবং তার প্রমাণ পেলে আমরা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো’ ।