ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন আমলে ট্রুথ কমিশন মুখোমুখি হওয়া অন্যতম কর্মকর্তা

সর্বোচ্চ আওয়ামী সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম আজাদ রহমান

আপলোড সময় : ২২-০৬-২০২৫ ১২:৫৪:৫৪ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২২-০৬-২০২৫ ১২:৫৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার
সরকারের সড়ক ভবনের নেতৃত্বে আজও সক্রিয় ‘কাদের চক্র’। সংস্কারের নামে উল্টো চলছে আওয়ামী পন্থীদের পুনর্বাসন। সুকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেখ পরিবারের মদদপুষ্ঠ কর্মকর্তাদের। হয়। আর একই প্রজ্ঞাপনে আসলাম এর স্থলে ঢাকা জোনে পদায়ন করা হয়, বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সর্বোচ্চ আওয়ামী সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম ও ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন আমলে ট্রুথ কমিশন মুখোমুখি হওয়া অন্যতম কর্মকর্তা এবং ময়মনসিংহ জোনের অধীনে কর্মরত অবস্থায় প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল এর দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহচর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম আজাদ রহমানকে।

গত ৫ই আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও সড়কে নানা অনিয়মে সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সিন্ডিকেট। সরকারের অধিকাংশ দপ্তরে সংস্কার চললেও সড়ক বিভাগে পড়েনি এর ছিটেফোটা আঁচও। তিনস্তর বিশিষ্ট সিন্ডিকেট চক্রের আওয়ামী বলয়ে চলছে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি। বদলি বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অধীনে সক্রিয় অর্থপাচার সিন্ডিকেট। ৫ আগস্টের পর ৩০ জন কর্মকর্তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিয়ে পাচার করা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও তার পরিবারের কোটি কোটি টাকা। যারা গত সাড়ে পনের বছর সড়কে গড়ে তুলেছিল ‘কাদের চক্র’।

গোপন সুত্রে জানা যায়, রমজান মাস ও ঈদুল ফিতরে এই চক্রের রয়েছে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা। ঠিকাদার সঙ্কট দেখিয়ে রাস্তাঘাট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষনে কৃত্তিম অব্যবস্থাপনা সৃষ্টি করে তৈরি করা হবে ইতিহাসের সর্বোচ্চ কৃত্তিম জনদূর্ভোগ। আর এর মূল পরিকল্পনাকারী সড়ক ও জনপদ-সওজ এর প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান। তিনি সেন্ট্রাল বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের চলমান সদস্য। আইইবি-২০২২-২৩এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের (সবুর-মঞ্জুর প্যানেল) শেখ হাসিনার মতই বিনাভোটে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছিলেন কাউন্সিল মেম্বার (আইইবি মেম্বার নং ১৪৫৫০)। সে সময় তার ব্যালট নম্বর ছিল ১২১। শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে গঠিত সড়ক কমিটির উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বুয়েট ছাত্রলীগ নেতাও ছিলেন সওজের এই প্রধান প্রকৌশলী। স্বযাচিত হয়ে কর্মকর্তাদের বহর নিয়ে বারবার মুজিবের মাজারে পুস্পত্ববক অর্পণ করে ব্যাপক সমালোচনার স্বীকার হোন।

তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যও ছিলেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মঈনুল হাসানের আপন চাচাতো ভাই শামসুল আলম কচি মল্লিকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি এবং নড়াইল জেলা পরিষদের আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সদস্য। সাধারণ ব্যাংক কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শেষ করলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোট দেড়  থেকে দুই লাখ টাকায় কিনে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম  দেন তিনি। মঈনুল হাসানের ভাগ্নে সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মুনতাসির হাফিজ সড়ক ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির আওয়ামী প্যানেলের দুইবারের নির্বাচিত সভাপতি। এর আগেও ছিলেন একই সমিতির পর পর দুইবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।

অভিযোগ রয়েছে সড়ক নিয়ন্ত্রনের জন্যই মঈনুলের বিশেষ হস্তক্ষেপই মুনতাসীরের উত্থান হয়। মধ্যম সারির  যেকোন কর্মকর্তার পদায়ন বা বদলিতে মঈনুল ভাগ্নে মুনতাসিরে আর্শিবাদপুষ্ট হতে হতো। বদলি কিংবা পদায়নে আর্থিক লেনদেন এর মূল দায়িত্বে থাকতো মুনতাসির। বদলি-পদায়নের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ পরবর্তীতে জমা দেয়া হতো অর্থ সংগ্রাহয়ক সিন্ডিকেট প্রধানের হাতে। বিরোধী মতাদর্শের মধ্যমসারির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শায়েস্তা করতে মুনতাসিরের ছক অনুযায়ী করা হতো ওএসডি কিংবা শাস্তিমূলক বদলি। এ কাজে তার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল তৎকালীন আওয়ামী আর্শিবাদপুষ্ট প্রশাসন ও সংস্থাপনের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আমানউল্লাহ্ ও ডিপ্লোমা সমিতির সদ্য বিদায়ীসেক্রেটারী মো. মনিরুল আলম। তাদের একক দৌরাত্বে ঢাকা সড়ক জোন পরিনত হয় ‘মামাভাগ্নে জোনে’।প্রধান প্রকৌশলী মঈনুলের তত্ত্বাবধানে ডিপ্লোমা সমিতির ব্যানারে চলতো লোক দেখানো দুস্থদের মাঝে খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণের নামে দেশব্যাপী শেখ হাসিনা বন্দনা।

সেতু ভবনে আগুনের নেপথ্যে ওবায়দুল কাদেরের হাত:
অবাক করার মতো তথ্য হচ্ছে, ৫ আগস্টের আগে মহাখালীর সেতু ভবন, ঢাকা সড়ক বিভাগ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও বনানী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজাসহ বিভিন্ন স্থাপনা আগুনে পুড়ে দেয়ার নেপথ্যের নায়ক ছিল ওবায়দুল কাদের নিজে। আর তিনি এই কাজে সহযোগিতা নিয়েছেন সড়ক ভবনের ‘কাদের সিন্ডিকেট’ সদস্যদের।
ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগ স্থাপনাগুলোতে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালান। এই নাশকতার পুরো অর্থায়নই করেন মঈনুল হাসান। মহাখালী এলাকা জুড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ছাত্রলীগ নাশকতা চালালেও সেতু ভবনের ৫০ মিটার রেডিয়াসের মধ্যে অবস্থিত মঈনুল হাসানের সরকারি বাসভবন ছিলো সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। তখন পালা করেই ছাত্রলীগ-যুবলীগ পাহারা দিতো তার বাসভবন। মহাখালী জলখাবার  মোড়ে এ নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে।

মঈনুল হাসান সড়কের সর্বোচ্চ ধূর্তদের একজন। নিজের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বাসভবনে কোন প্রকার  টেন্ডার ছাড়াই ঠিকাদার ও ঢাকা সড়ক বিভাগের সদ্যবিদায়ী আওয়ামীপন্থী নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্যার কাছ থেকে আড়াই কোটি টাকার আসবাবপত্র ও ইন্টেরিয়র কাজ করান। পুরস্কার হিসাবে নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্যাহকে প্রধান প্রকৌশলী মঈনের একক হস্তক্ষেপে গত ৯ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগে পদায়ন করা হয়। আর আহাদ উল্যাহ’র স্থানে স্থলাভিষিক্ত করা হয় সাবেক  প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের পিএস অশোক বাবুর ভাগ্নী জামাই রিতেশ বড়ুয়াকে। অথচ বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে দীর্ঘদিন যাবত এই রিতেশ বড়ুয়া ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদের ছত্রছায়ায় কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগে কর্মরত। তথাকথিত সড়ক সজ্জন সৈয়দ মঈনুল হাসান ময়মনসিংহ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় তার অধিনস্থ তৎকালিন কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এই রিতেশ হয়ে উঠে বেপরোয়া ও লাগামহীন। তৎকালিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জের প্রায় সকল সেতুতেই লোহার পাতের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করার প্রমাণসহ প্রতিবেদন এসেছিলো। সেতুতে লোহার পরির্বতে বাঁশ ব্যবহার করার প্রচলনের এ খবর দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্য ও সমালোচনার ঝড় উঠলেও সড়কের কথিত সজ্জন মঈনুল হাসানকে দেখা যায়নি তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নিতে।

আওয়ামীপন্থীদের নজিরবিহিন পুনর্বাসন ও পদায়ন:

প্রধান প্রকৌশলী মঈনুলের বিরুদ্ধে আছে আওয়ামীপন্থীদের পুনর্বাসন ও পদায়নের আরো ব্যাপক অভিযোগ। ৫ই আগষ্ট পরবর্তী সময় মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাদের নতুত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের সংস্কারের কথা বলে আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পদায়ন করছেন মঈনুল। পুনর্বাসন করছেন আওয়ামী দুর্দিনে পরীক্ষিত ছাত্রলীগ নেতাদের। একারণে ঠিকাদারসহ কর্মকর্তাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ব্যাপক অসন্তোষ। ৫ই আগষ্ট পরবর্তী সময় তার নানা অপকর্মের হোতা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ওরফে ম্যাক আজাদকে অপসারেণের ব্যাপক দাবি উঠলে, উল্টো তাকে গত ৮ইসেপ্টেম্বর ৩৫.০২২.০৬০.০০.০০.০০৭.২০০৯(অংশ-১) ৪৯৩ নং স্মারকে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকিউরমেন্ট সার্কেল থেকে লোক দেখানো সরিয়ে দিলেও; আরো বড় দায়িত্ব সড়ক গবেষণাগারের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে পদায়ন করা হয়। এই ম্যাক আজাদ ছিলেন সড়ক বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক। ১৫ই আগস্টসহ বঙ্গবন্ধু সম্পর্কিত যাবতীয় দিবসের সড়কের সকল প্রোগ্রামের অন্যতম আয়োজক তিনি। পছন্দের ঠিকাদারদের সুবিধা দিতে সাধারণ ঠিকাদারদেরকে কোণঠাসা করে রাখার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তিনি ছিলেন আওয়ামী যুগের মঈনুল সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্যের অর্থ সংগ্রাহক। অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্য ইসকন নেতা কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র দাস, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাহী প্রকৌশলী অমিত কুমার চক্রবর্ত্তী, ইসকন সদস্য সাবেক পাবনা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সমীরণ রায়, ওবায়দুল কাদেরের দীর্ঘদিনের সহচর নোয়াখালী সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া, প্রধান প্রকৌশলীর বন্ধু অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. আবদুল্লাহ-আল-মামুন।
সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনির পাঠান জেলে গেলেও সহযোগিরা সক্রিয় সড়কে: দুদকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও কয়েকমাস কারাবাস করা সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মনির পাঠানের দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তকালীন সময়েও অর্থ সংগ্রাহক ও তার ব্যাপক দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে ম্যাক আজাদের নাম আসে। দূর্নীতির দায়ে পাঠান অভিযুক্ত হলেও প্রভাবশালী ম্যাক আজাদ থেকে যায় ধরাছোয়ার বাহিরে। তাকে গত ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ০০.০১.০০০০.৫০১.০১.০১২.০২৩/৪৮৯৭৪ স্মারকে দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদান করতে বলা হলেও হাজির হননি তৎকালীন প্রকিউরমেন্ট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ ওরফে ম্যাক আজাদ। তার পক্ষে তৎকালিন ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক সচিব ও বর্তমানে খুনের মামলায়  গ্রেফতারকৃত মতিন, বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল (তৎকালিন রক্ষণাবেক্ষনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী), গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জিকরুল হাসান দুদক চেয়ারম্যান এর সাথে সরাসরি দেখা করে উল্টো দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী পরিচালককে অপসারণের জন্য চাপ  দেন। কিন্তু ততদিনে ম্যাক আজাদের বক্তব্য ছাড়াই মনির পাঠানের তদন্ত শেষ হয়। নানা মহলে রিপোর্টটি চলে গেলে দুদকের সেই কর্মকর্তা সাময়িক রক্ষা পায়।

অন্যদিকে সড়ক গবেষণাগার থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আহসান হাবিবকে ম্যাক আজাদের স্থলাভিশিক্ত করে প্রকিউরমেন্ট সার্কেল এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসাবে পদায়ন করা হয়। যিনি দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে থেকে মঈনুলের নানা অনিয়মের মাস্টারমাইন্ড হিসাবে কাজ করে আসছে। শেখ পারিবারের অবৈধ অর্থ পাচারকারীকে খুলনা থেকে আনা হয়েছে ঢাকায়:
এছাড়াও ৩৫.০০২.০৬০.০০.০০.০০৭.২০০৯ (অংশ-১) ৪৯২ নং স্মারকে আওয়ামীপন্থি সৈয়দ আসলাম আলীকে খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী  থেকে ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে পদায়ন করা হয়। অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবেই চরম ব্যর্থ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আসলাম একসময় পূর্ন করতে পারেনি ঢাকা সড়ক বিভাগে তার তিন বছর মেয়াদ। ঢাকা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় বসিলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জমিসহ গড়ে তুলেন অঢেল সম্পত্তি। আওয়ামী লীগ আমলে খুলনা সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনকালে শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের অবৈধ অর্থ যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারতে পাচার করতো এই আসলাম আলী। দুর্নীতি ও বদলি বাণিজ্যের অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার সিন্ডিকেটের প্রধান ছিলেন ঝিনাইদহের বাসিন্দা এই আসলাম। এ-কাজে আসলামের সহযোগী ছিলেন দিনাজপুর সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুল আলম খান ও কুষ্টিয়া সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এবং ইসকন সদস্য বিকাশ চন্দ্র দাস। মিস্টার ২% খ্যাত আসলাম ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। সড়কে তিনি সবার বড় ভাই হিসেবে পরিচিত। লিয়াজো রক্ষায় গণভবনের কাছাকাছি মোহাম্মদপুর থানা সংলগ্ন কোটি টাকায় কেনেন বিলাশবহুল ফ্ল্যাট। অভিযোগ আছে ৫ই আগষ্ট পরবর্তী সময়ে শতাধিক আওয়ামী নেতাকর্মীদের ভারতে পালাতে সহযোগিতা করেন তিনি।
তবে নানা মহলের ব্যাপক চাপের মুখে বিগত ২২ শে জানুয়ারী উপ-সচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন নং ৩৫.০০.০০০০.০২২.১৯.০০৯.২৫-১৯ এর মাধ্যমে আসলাম আলীকে ঢাকা জোন থেকে সরিয়ে বৃহৎ প্রকল্প ঢাকা বাইপাসে পদায়ন করে চুড়ান্ত পূনবার্সন করা হয়। আর একই প্রজ্ঞাপনে আসলাম এর স্থলে ঢাকা জোনে পদায়ন করা হয়, বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও সর্বোচ্চ আওয়ামী সুবিধাভোগীদের মধ্যে অন্যতম ও ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিন আমলে ট্রুথ কমিশন মুখোমুখি হওয়া অন্যতম কর্মকর্তা প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল এর দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত সহচর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ.কে.এম আজাদ রহমানকে।

এ.কে.এম আজাদ রহমানকে
ইতিমধ্যেই প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল নিজের প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ার সুরক্ষায় রাখতে দীর্ঘদিনের প্রথা বহির্ভূতভাবে কোনপ্রকার নির্বাচন ছাড়াই বিগত ১লা ফেব্রুয়ারী ২০২৫ শনিবার তড়িঘড়ি করে বার্ষিক সাধারণ সভা ডেকে সড়ক ও জনপথ প্রকৌশলী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত করেন একেএম আজাদ রহমানকে। অন্যদিকে আসলামকে স্থলাভিশিক্ত করা হয়েছিল ওবায়দুল কাদেরকে সর্বোচ্চ প্রটোকল দেয়াদের মধ্যে অন্যতম কর্মকর্তা অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খানের স্থলে। বর্তমানে তাকে ন্যস্ত করা হয় সরাসরি প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর সংলগ্ন ছুটি, প্রশিক্ষণ ও প্রেষণ জনিত সংরক্ষিত (সিভিল) পদে।

অভিযোগ আছে আওয়ামী সরকারের পুরো সময় জুড়ে সড়কের পক্ষথেকে মন্ত্রী-এমপিদের সর্বোচ্চ প্রটোকল দেয়ায় তৎপর ছিল একেএম আজাদ রহমান, সবুজ উদ্দিন খাঁন, টেকনিক্যাল সার্ভিস উইং’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সোয়েব আহমেদ, চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আতাউর রহমান, ময়মনসিংহ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শওকত আলী, কুমিল্লা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল, সদ্য সিলেট জোনের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ফজলে রব্বে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরে আলম, কুমিল্লা সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার ও ছাত্রজীবনে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকলেও বিগত ১৬ বছরে সর্বোচ্চ আওয়ামী সুবিধাভোগীদের অন্যতম সদ্য বিদায়ী রাজশাহী  জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান। যদিও গত ২২শে জানুয়ারী উপ-সচিব মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন নং ৩৫.০০.০০০০.০২২.১৯.০০৯.২৫-১৯ এর মাধ্যমে তাকে পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষন উইং এর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করা হয়। যা সওজ এর প্রকৌশলীদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদ হিসাবে বিবেচিত। ইতিমধ্যেই যোগ্যতা, অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস, ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও কঠোর পরিশ্রমের মানসিকতার কারনে তাকে সড়কের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিবেচনা করছে পরবর্তী প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে।

সংস্কারের বলিরপাঠা বানানো হয়েছে রাজনীতি না করা ১০ কর্মকর্তাকে গত ৯ই সেপ্টেম্বর প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান স্বাক্ষরিত ৩৫.০১.০০০০.১৫০.১৯.০২১.০৫ (১১ম খন্ড) ৭১৪ নং স্মারকে প্রজ্ঞাপনে নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ ছাড়াও একসঙ্গে ৯ জন নির্বাহী প্রকৌশলীকে তুলনামূলক ভাল পদে পদায়ন করে পুর্ণবাসন করা হয়। অথচ তারা সকলেই আওয়ামী সুবিধাভোগী ও আর্শীবাদপুষ্ট। অন্যদিক মঈনুলের ইচ্ছেমত গত ৬ নভেম্বর ৩৫.০২২.০১৯.০০.০০.০০৯.২০০৩ (অংশ-১)-৬০৪ নং স্মারকে বলিরপাঠা হিসেবে ১০ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। অথচ তাদের কেউই কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। অর্ডারটিতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ফজলে রব্বে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তাপসী দাস ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবু হেনা  মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়। কিন্তু একই প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী সুবিধাভোগী তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী  মো. জাহাঙ্গীর আলমকে খুলনা সড়ক সার্কেলে পদায়ন করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। একইসঙ্গে সড়ক রক্ষণাবেক্ষন শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জিকরুল হাসানের একই পদে বহাল থাকার বিষয়টি সবচেয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। তিনি ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমান সড়ক বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি। একাধিকবার আইইবি নির্বাচনে  কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা সবুর-মঞ্জু প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেন; শেষ ২০২২-২৩ এর নির্বাচনে কাউন্সিল মেম্বার হিসেবে, তার ব্যালট নং ছিলো ৫৫, ফেলো আইইবি সদস্য নং ৮১৯৯।

চতুর প্রধান প্রকৌশলীর মতই কিছু আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তা দফতরটিতে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাহিরে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলামের বহাল তবিয়তে থাকা সড়ক সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কৌতুহলের জন্ম দিয়েছে। যিনি আওয়ামী লীগের আমলের দলীয় স্বার্থরক্ষায় শেখ সেলিম ও শেখ মারুফের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে গোপালগঞ্জে পদায়ন করতেন। তিনি ছিলেন সরাসরি শেখ পরিবারের লিয়াজু সিন্ডিকেটের প্রধান। এই সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য ছিলেন রংপুর সড়ক জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সুরুজ মিয়া। শেখ হাসিনার শ্বশুরবাড়ি খ্যাত রংপুর  জোনে পদায়নের পূর্বে সুরুজ মিয়া ছিলেন গোপালগঞ্জ সড়ক জোনে। এভাবেই চলতো কখনো নিজ বাড়ি; আবার নিজ বাড়ির পর শ্বশুরবাড়ি পদায়ন।
ট্রেইনিং এর নামে অর্থ পাচারে ৩০ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয় বিদেশে: গত ৫ই আগস্টের পর ট্রেনিং ও উচ্চশিক্ষার নামে বিভিন্ন মেয়াদে ৩০ কর্মকর্তার বিদেশ গমনের অনুমোদন ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সড়ক সূত্রের তথ্যমতে, মূলত সরাসরি প্রধান প্রকৌশলী মঈনের তত্ত্বাবধানে এই ৩০ জন আওয়ামী সুবিধাভোগী কর্মকর্তার মাধ্যমেই শেখ পরিবার ও ওবায়দুল কাদেরের বিপুল অবৈধ অর্থ ইতোমধ্যেই বিদেশে পাচার করা হয়েছে। অর্থপাচারের সরাসরি যুক্ত ছিলেন মঈনুল হাসান। এজন্যই সড়কের একজন নিয়মিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পরেও আওয়ামী বিশেষ মহলের সরাসরি হস্তক্ষেপে তাকে অধিকাংশ সময় ডেপুটেশনে বিভিন্ন পদে স্থানান্তর করা হয়। তাকে সংযুক্ত করা হয় মিনিস্ট্রি অফ ফরেন অ্যাফেয়ার্স এর ডিরেক্টর পদে। এরপর তাকে পোস্টিং করা হয় রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর পদে। আওয়ামী সরকারের অর্থপাচার আরো নির্বিগ্ন ও ত্বরান্বিত করতে তার সাথে পরবর্তীতে যুক্ত করা হয় তারই স্ত্রী ফেরদৌসী শাহরিয়ারকে। ফেরদৌসী শাহরিয়ারও বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা। তিনি দীর্ঘদিন ওয়াশিংটন ডিসিতে  ডেপুটি চিপ অফ মিশন হিসেবে বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। কোন সরকারের বিশেষ নেক নজর ছাড়া আমেরিকার মতো দেশের দূতাবাসে ডেপুটি চিপ অফ মিশন হিসাবে কর্মরত থাকার সুযোগ নেই। তৎকালীন সরকারের সময় তাকে আমেরিকার নানা সভা, সেমিনার ও অনুষ্ঠানে আওয়ামী তথা শেখ হাসিনা বন্দনার বক্তব্য দিতেও দেখা যায়।
গুঞ্জন রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের আমেরিকায় অর্থপাচার করা হতো এই মঈনুলের স্ত্রী  ফেরদৌসী শাহরিয়ার ও ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইসরাতুন নেছা কাদেরের ভাতিজি কামরুন্নেসা ও ভাস্তি জামাই এ জে এম ওবায়দুর রহমান খান ওরফে শাওনের  নেতৃত্বে। 
সরকারি আর কোন দপ্তরেই সিরিয়ালকে এতো গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্ব দেয়া হয় যোগ্যতাকে। আর সড়কের নিয়মিত অফিসার না হয়েও কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় ডেপুটেশনে অন্যত্র কর্মরত থেকেও সরাসরি অভিজ্ঞতা ছাড়াই সড়ক ও জনপথের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তরের শুধুমাত্র আওয়ামী আর্শিবাদপুষ্ট হওয়ায় রাতারাতি প্রধান প্রকৌশলী করা হয় মঈনুল হাসানকে। 
অভিযোগ আছে আওয়ামী লীগ আমলে বিগত বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারী মাসে শুদ্ধি অভিযানের নামে কালো তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাগিয়ে নেন ঠিকাদারদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা। যেসব ঠিকাদার মঈনুলের চাহিদা মত ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের উপর নেমে আসে কালোতালিকাভুক্তির খড়গ। ঘুষের অংকের তারতম্যভেদে একেক ঠিকাদারকে করা হয় একেক মেয়াদেকালের কালোতালিকাভুক্তি। বিস্তর অনিয়মের প্রমাণ থাকার পরেও টাকার বিনিময়ে রেহাই পেয়ে যায় রাঘববোয়ালরা। উল্টো তার বলয়ের কিছু সাংবাদিক দিয়ে আওয়ামীলীগ আমলে যেসব ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তাদের বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করা হয় রাঘববোয়াল হিসেবে।
বিপুল টাকার একটি অংশ তুলে দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী ইশরাতুন নেসা কাদেরের হাতে। বাকি টাকা সরাসরি চলে যায় নিজস্ব বলয়ের কিছু অফিসার, সাংবাদিক, ওবায়দুল কাদেরের ব্যক্তিগত সহকারি ও খুনের মামলার আসামি মতিন, তৎকালীন আওয়ামীপন্থী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, সওজ’র একজন আওয়ামী আমলের নিয়োগপ্রাপ্ত ও সুবিধাভোগী প্যানেল আইনজীবি এবং তার নিজ পকেটে।
আর এখন এই মঈনুল প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসে করছে আওয়ামীপন্থীদের পুনর্বাসন ও পুরস্কারস্বরূপ পদায়ন। আর যারাই তার এসব কর্মকান্ডের বিপক্ষে কথা বলছে তাদের করা হচ্ছে শাস্তিমূলক ওএসডি কিংবা যোগ্যতা থাকার পরেও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে পদায়ন। মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্রে জানা যায় মূলত মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের নতুনত্বের সুযোগে তিনি তাদের যা খুশি তাই বুঝিয়ে  করিয়ে নিচ্ছেন তার একক ইচ্ছায় আওয়ামীপন্থীদের পুরস্কারস্বরূপ পদায়ন কিংবা পুনর্বাসন। অন্যদিকে সন্দেহাতীতভাবে যোগ্যতম হওয়ার পরও কিছু কর্মকর্তাদের করছে শাস্তিমূলকভাবে ওএসডি কিংবা কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে পদায়ন। অন্যদিকে এসব পদায়ন নিয়ে সড়ক ভবনে কর্মকর্তাদের মাঝে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ জন্ম নিলে পুরো দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন মন্ত্রণালয়ের বড় বড় কর্তা ব্যক্তিদের উপর। প্রধান প্রকৌশলী মঈনুল নিজ চক্রান্ত ঢাকতে মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের নামে এহেন মিথ্যাচারের কারণে পুরো সড়ক জুড়েই মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের উপর একপ্রকার ক্ষোভ জন্ম নিচ্ছে। সড়কের একাধিক কর্মকর্তা এক একপ্রকার চাপা ক্ষোভ নিয়েই বলেন, সড়কের অবস্থাও হবে দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মতোই। আর এর জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী থাকবে আওয়ামী প্রেতাত্মা তথাকথিত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান। এই ব্যর্থতা এবং বিশৃঙ্খলার দায় মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিরাও এড়াতে পারেন না। সংস্কারের এই সময়েও কেন তাদের আওয়ামী প্রেতাত্মার উপর-ই ভরসা রাখতে হবে? কারণ সড়কে অন্ততপক্ষে ১৫ জন প্রকৌশলী রয়েছে যারা মইনুলের  চেয়ে শতভাগ কার্যকর ও অভিজ্ঞ।
একটি বিশেষ সূত্র মতে নভেম্বর-ডিসেম্বরেই মইনুল হাসানের বাধ্যতামূলক অবসর একপ্রকার সরকারের উচ্চ মহলে সিদ্ধান্ত হয়েই গিয়েছিল।
তবে কোন এক সরকারের উপদেষ্টার বাবার বিশেষ তদবিরে তিনি এখনো বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তবে ইতিমধ্যেই সড়ক ভবনে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে এ নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা  দেয়। দেশের প্রথম সারির প্রায় পঞ্চাশটির অধিক গণমাধ্যমে এ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও মঈনুল থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। মন্ত্রণালয়ের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে এই ধরনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোকে মইনুল প্রকাশ করছে তার বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারের ষড়যন্ত্র বলে। দেশের প্রথম সারির একাধিক গণমাধ্যম এজন্য ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ভিডিও প্রতিবেদনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো প্রমাণের জন্য ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে। যাতে করে তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অভিযোগগুলোর অকাট্য দলিলাদিসহ সরকার তথা পাঠকের সামনে তুলে ধরা যায়।

বিগত ২৭ ফেব্রুয়ারী দেশের একটি অনলাইন মিডিয়ায় মঈনুলে কর্মকর্তাদের পদায়নের নীলনকশা ফলাও ভাবে প্রকাশ পেলে সড়ক ভবন জুড়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক অসন্তোষের মূখে বৃহস্পতিবার মঈনুল তার কর্মস্থলে ছিলেন পুরোদিনই ছিলেন অনুপস্থিত। সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার সারাদিনই তিনি ছিলেন জাতীয় রেলভবনে সড়কের অস্থায়ী মন্ত্রণালয়ে নানা তদবিরে ব্যস্ত। মরিয়া হয়ে উঠেছেন অর্ধ শতাধিক প্রথম সারির গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদগুলোকে মিথাচার বলে প্রতিষ্ঠিত করতে। এসময় তার সাথে উপস্থিত ছিলো সড়কের আরো দুইজন উচ্চপদস্ত প্রকৌশলী। নিয়মিত সরকারি কর্মদিবসে অনুপস্থিত থেকে গত শনিবার তিনি তার সিন্ডিকেটের কিছু কর্মকর্তাদের নিয়ে সকাল ৯:৩০ থেকে  ১১:৩০ পর্যন্ত দুই ঘন্টা দাপ্তরিক কাজ শেষে আবারও ছুটে যান মন্ত্রণালয়ে।-চলবে...
 

সম্পাদকীয় :

উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য : ডাঃ মোঃ হাফিজুর রহমান
সম্পাদক : তোফাজল আহমেদ ফারুকী
ব্যাবস্থাপনা সম্পাধক : আব্দুল্লাহ রানা সোহেল
প্রকাশক : মোঃ সোহেল রানা
বার্তা সম্পাদক : মোঃ আব্দুল কাদের জিলানী
প্রধান প্রতিবেদক : হাসিবুর রহমান হাসিব 

যোগাযোগের ঠিকানা :

লাবিনা এপার্টমেন্টে # বাড়ি এ-৩, রোড # ০৮, সেক্টর #০৩,উত্তরা
উত্তরা মডেল টাউন -ঢাকা -১২৩০, বাংলাদেশ

মোবাইল :  ০১৭১৭-৬৭৬৬৬৪

ই-মেইল :  dailyvoicenews247@gmail.com