ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশেষ গোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নিতে মরিয়া নোমান গ্রুপের নামে জোর প্রোপাগান্ডা

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০৮-১০-২০২৪ ০১:০৩:২৬ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ০৮-১০-২০২৪ ০১:০৩:২৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ গোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নিতে মরিয়া নোমান গ্রুপের নামে জোর প্রোপাগান্ডা বিশেষ গোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নিতে মরিয়া নোমান গ্রুপের নামে জোর প্রোপাগান্ডা
দেশে নব বিপ্লব ঘটার মধ্যদিয়ে কাঙ্ক্ষিত পটপরিবর্তনের পর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাভার গ্রহণ করার পর উপদেষ্টামণ্ডলী গঠন করে দেশ পরিচালনা করছে। দেশবরেণ্য বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী-পেশাজীবীদের নিয়ে সময়োপযোগী সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে দেশ। 

ঠিক এমন সময় একটি শ্রেণি প্রচারমাধ্যমকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে একটি ঘৃণ সুবিধাভোগী কুচক্রী মহল কখনো উপদেষ্টাদের বিভিন্ন নসিহত, কখনো বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে কুৎসা রটিয়ে বিভিন্নভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টায় মত্ত। তারা দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। ঘৃণ সুবিধাভোগী চক্রটি এবার পিছু নিয়েছে দেশের স্বনামধন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপের। ৩৬টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত দেশেসেরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের আবাসস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানের তথা নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলামের নামে বিভিন্ন মিথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ঘৃণ সুবিধাভোগী ওই চক্র। নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম ‘সিআইপি’ও বটে।

বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময় ওই চক্রটি জামায়াত-বিএনপির লোক বলে যেমন অপপ্রচার ও হয়রানি করেছে, বর্তমান সময়ে একই ভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের লোক বলে বিভিন্ন মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা তথাকথিত ব্যাংক জালিয়াতির একটি ফিরিস্তি একটি পত্রিকায় তুলে ধরেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তারা অপপ্রচারে যোগ কেরেছে যে, সোনালী ব্যাংক থেকে দুই হাজার কোটি টাকা, ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে তিন হাজার কোটি টাকা, জনতা ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, প্রাইম ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকা, সিটি ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা, এনসিসি ব্যাংক তেকে ৫০০ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক থেকে্‌কে হাজার কোটি টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ৫০০ কোটি টাকা এবং ব্র্যাক ব্যাংক থেকে ৭০০ কোটি টাকা নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে নেয়া হয়েছে।

অথচ এসব তথ্য মিথ্যা-সংমিশ্রিত। বাস্তবে সোনালী ব্যাংকে কোনো হিসাব নেই। সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংকেও কোনো লোন নেই। ব্যক্তিমালিকানাধীন অন্যের সম্পত্তি বা সরকারি সম্পত্তি বন্ধক রেখে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিথ্যা অভিযোগও করা হয়েছে। হয়রানিমূলক মিথ্যা ও বনোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) (স্মারক নং-০০.০১.০০০০/৪০৪.০১.০১০১.২২) তদন্ত  চালাচ্ছিল। পরে হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে হাইকোর্ট বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তটি স্থগিত রাখে।

মো. নূরুল ইসলাম দেশের একজন স্বনামধন্য ব্যবসায়ী ‘সিআইপি’। তিনি দেশের ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। মেহমান হিসেবে তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে অন্য ব্যবসায়ীদের মতো যোগ দিতেন। এখানে রাজনীতি মুখ্য নয়, এসব অনুষ্ঠানে আমাদের সাথে আগ্রহের সাথে ইনকিলাবের সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন , প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতউির রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক সম্পাদক মাহফুজ আনাম, মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ছাড়াও অনেক সম্পাদক যোগ দিতেন। অথচ কুচক্রী মহলটি এটাকে অপরাধ হিসেবে অপপ্রচার চালিয়েছে।

এদিকে নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সম্প্রতি একটি দৈনিকে দেখলাম আমার প্রতিষ্ঠান ও আমার বিরুদ্ধে নিউজ হয়েছে। এই নিউজে হলুদ সাংবাদিকতার পুরো ব্যাকারণ জানা গেল। একটি মানুয়ের সম্পর্কে মিথ্যা সাংবাদিকতা কতভাবে করা যায়, এই সংবাদে দেখলাম ও মজা পেলাম এবং জানলাম তথাকথিত সাংবাদিক মহান পেশা সাংবাদিকতাকে কত নিকৃষ্ট করতে পারে।

মো. নূরুল ইসলাম বলেন, আমি একজন সিআইপি। আমি কোনো রাজনীতি করি না, জানিও না। এটা আমার পেশা নয়, আমার পেশা ও নেশা শুধুমাত্র ব্যবসা। আমি প্রতি বছর সরকারকে রাজস্ব দিয়ে থাকি। ব্যবসায়িক কারণে ব্যাংক লোন আমাকে নিতে হয়, একটি ব্যাংক লোন পেতে হলে কত প্রকারের কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হয়, কত যাচাই-বাছাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ করে, এটা সবারই জানা। এখান থেকে একটি টাকাও অবৈধবাবে নেয়া অবাস্তব। আমি প্রধানমন্ত্রীর তহবিলসহ সামাজিকভাবে সমাজে বিভিন্ন ভালো কাজে আর্থিকভাবে সহয়তা করে থাকি।এছাড়াও দেশের যে কোনো প্রান্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক না কেন, আমার সহয়তার হাত সেখানে পৌঁছে যায়। এসব অপরাধ হলো কিভাবে? প্রকৃত সাংবাদিকদের কাছে আমার প্রশ্ন- সাংবাদিকতার কোন জায়গায় এটা অপরাধ বলা হয়?

আমি সব সময় একজন ব্যবসায়ী, তাই আমাকে বাস্তবতার সাথে চলতে হয়; রাজনীতির সাথে নয়। আমি রাজনীতি জানি না। আমাকে হাজার হাজার শ্রমিকের মুখের দিকে তাকিয়ে সকলের আহারের জন্য কাজ করতে হয়। আমি একজন সামাজিক জীব, আমার বাসায় মেহমান হিসেবে আমার আত্মীয়স্বজন আসবেন এবং আমার লেভেলের সঙ্গী-সাথীরা আসবেন। আমার ব্যবসায়ীরা আসবেন, এমপি-মন্ত্রীরা আসবেন এবং আমিও বেড়াতে যাব। এটায় তো দোষের কিছু নেই। আত্মীয়তার সূত্র ধরে আমার বাসায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এলে এটা তো খুশীর বিষয়। কারণ মেহমান আল্লাহর রহমতস্বরূপ আল্লাহর তরফ থেকে আসেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত সমন্বয়কদের দেখতে আমার কন্যা নূর-ই-ইয়াসমিন ফাতিমা হাসপাতালে যায়। কারণ আমারও সন্তান আছে। আমি একজন বাবা হিসেবে বিবেকের তাড়নায় আমার সন্তানতূল্য সমন্বয়কদের ভালোবাসার অনুভূতি থেকে তাদের খোঁজখবর নিয়ে থাকি এবং নিজেই দেখতে যাই।

নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান আরো বলেন, বিগত সরকারের আমলে ওই কুচক্রী মহল আমাকে জামায়াত-বিএনপি বানিয়ে আওয়ামী লীগ দ্বারা যেভাবে হেনস্তা, হয়রানি ও ক্ষতিসাধন করেছে, ঠিক একই কায়দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাভার গ্রহণ করার পর এখন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের লোক হিসেবে চিত্রায়িত করে আগের সেই একই রকম হেনস্তা, হয়রানি ও ক্ষতিসাধনের অপচেষ্টায় লিপ্ত।

তারা সব সময় হলুদ সাংবাদিকদের লেলিয়ে দিয়ে আমাকে, আমার পরিবারকে এবং আমার প্রতিষ্ঠানসমূহকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। তারা আমাদের ক্ষতি করতে বিভিন্ন কিছুর আশ্রয় নিয়ে থাকে। এখন আমার উপায় কী? আমাকে মামলাবাজ হিসেবে আখায়িত করা হয়েছে ওই ভুয়া সংবাদে। আমি যেভাবে ওই কুচক্রী মহলের একর পর এক চক্রান্তে আক্রান্ত হয়েছি এবং হয়ে আসছি, এ সময় আমার আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া কী উপায় আছে? আমার সবকিছু আপনাদের ভাবনায় ছেড়ে দিলাম।

এদিকে, দেশের অপরাধ বিষয়ক বিশ্লেষক বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রদীপ কুমার বলেন, বর্তমান বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার নিয়ে উদারপন্থায় দেশ পরিচালনা করছে। আমরা দেখছি এই সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য আওয়ামী নেতৃবৃন্দ ও তাদের ঘরানার সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এবং অন্যান্য পেশার তাদের লোকজন যে যার অবস্থান থেকে ক্ষতি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। সম্প্রতি হাসিনার ভাইরাল হওয়া কলরেকর্ডে তার বক্তব্যে ঠিক একই রকমের প্রতিফলন হতে দেখা যাচ্ছে। আর এতে সবচেয়ে বেশি কাজ করছে কিছু ইউটিবার ও হলুদ সাংবাদিকরা।

এদের কাজ হচ্ছে দেশের পুলিশ প্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, আমলাদের প্রশ্নবিদ্ধ করা, সরকারি পদস্থ কর্মকর্তাসহ বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের প্রশ্নবিদ্ধ করা। এতে সাধারণ মানুষের মনে ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে এবং দেশে বিশৃংখলার সৃষ্টি হবে। আসলে ওই শ্রেণির সাংবাদিকদের ওপর নজর রাখা প্রয়োজন। কারণ ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের নেতা ও দোসরদের বর্তমান এজেন্ডা হচ্ছে সম্প্রতি বিপ্লবে যুবাদের তাজা রক্তের বিনিময় অর্জিত স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করা। এখন এদের হাত থেকে অর্থবহ বিপ্লবকে টিকিয়ে রাখতে হবে। কারণ লড়াই শেষ হয়নি, এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং পুলিশ প্রশাসন, সরকারি কর্মকর্তা, ডাক্তার, বিভিন্ন পেশাজীবীসহ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করতে হবে। বিশেষ করে বরেণ্য ব্যবসায়ী মো. নূরুল ইসলামের মতো লোক যিনি নোমান গ্রুপের চেয়ারম্যান, তাদের মতো আরো অনেক ব্যবসায়ীকে এখন ব্যবসায়িক নিরাপত্তা ও সহয়তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও সহয়তা একান্তই প্রয়োজন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ