দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের রক্ষক ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক। সহকর্মীদের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘জিনের বাদশা’ নামে।
জানা গেছে, বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন আবু বকর সিদ্দিক। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে।
কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও চাকরিকালে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন আবু বকর। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ভবনসহ ডজন খানেক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তাকে টাকা দিলেই মিলে যেত দুদকের ‘ক্লিনশিট’। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে তিনি ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। তার দুই ছেলে থাকেন যুক্তরাজ্যে। ঘুষের টাকা সেখানে পাঠিয়ে দেন হুন্ডিতে। আর সেই টাকা ‘রেমিট্যান্স’ হয়ে আবার চলে আসে আবু বকরের কাছে।
আবু বকরের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদকে তদবির বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা ছিলেন আবু বকর। ছিলেন দুর্নীতিবাজদের রক্ষক। দুর্নীতিবাজদের সব সমস্যার ‘মুশকিল আসান’ ছিলেন তিনি। টাকা নিয়ে দুদকের মামলার দায়মুক্তি পেতে সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির চিঠি ইস্যু করে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন এই কর্মকর্তা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবসরে যাওয়ার আগে তার সর্বশেষ বেতন ছিল সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকা। অথচ তার সম্পদের ফিরিস্তি দেখে খোদ দুদক কর্মকর্তাদেরও ভিরমি খাওয়ার উপক্রম।
রাজধানীর পূর্বাচলে আবু বকরের জমি থাকার তথ্য পেয়েছে কালবেলা। পূর্বাচলের ২৫ নম্বর সেক্টরে জয় বাংলা চত্বর সংলগ্ন ৫ কাঠা করে দুটি প্লটে ১০ কাঠা জমি আছে তার। সেখানেও বাড়ি নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া মুগদা বড় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি ডেভেলপার কোম্পানির মাধ্যমে আবু বকর তার জমিতে ১০ তলা ভবন তৈরি করছেন। সম্প্রতি সেখানে একজন ক্রেতা ফ্ল্যাট কিনতে যান। তিনি দুদক কর্মকর্তার ভবন শোনার পর ফ্ল্যাট না কিনে ফিরে আসেন। এর বাইরে রাজধানীর বনশ্রী, আফতাবনগর, উত্তর বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে ডজন খানেক ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে। নিজ জেলা জামালপুরেও রয়েছে বিপুল সম্পদ।
এদিকে, ভাটারা থানাধীন নতুন বাজার এলাকায়ও আবু বকর সিদ্দিকীর একটি ১০ তলা আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের তথ্য নিশ্চিত হয়েছে কালবেলা। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভাটারার নতুন বাজার এলাকার ১০ তলার ভবনটিতে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ভবনটির নাম ‘মিয়া ভাই প্লাজা।’ ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ভবনটির মালিক ও মালিক সমিতিরও সভাপতি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত এপ্রিলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৮ সালে মামলা করে দুদক। সেই মামলা থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক আবু বকরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় আবু বকর তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করার কথা জানিয়ে ৬০ লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি নগদ টাকা নিয়ে বাসায় গেলে ওই টাকা ডলারে কনভার্ট করে দিতে বলেন। শামসুজ্জামান স্বীকারোক্তিতে বলেন, আবু বকরকে ৩০ লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলার দেন। এতে বদলে যায় তদন্ত কর্মকর্তা। শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে থাকা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় দুদকের উপপরিচালক গোলাম মাওলাকে। এই কর্মকর্তাও বিভিন্ন সময় শামসুজ্জামান ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন। টাকা পেয়ে গোলাম মাওলা তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশসহ কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত আরও কয়েকজন কর্মকর্তাও এ ধরনের তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বিলুপ্ত দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন আবু বকর সিদ্দিক। পর্যায়ক্রমে হন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক। তার এই পদোন্নতির পেছনেও রয়েছে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা। ঘুষের বিনিময়ে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি দিতেন তিনি। তাদের কাছ থেকে ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে।
কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হলেও চাকরিকালে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন আবু বকর। রাজধানীর অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ কয়েকটি ভবনসহ ডজন খানেক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। তাকে টাকা দিলেই মিলে যেত দুদকের ‘ক্লিনশিট’। দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতে তিনি ঘুষ নিতেন ডলার ও ইউরোতে। তার দুই ছেলে থাকেন যুক্তরাজ্যে। ঘুষের টাকা সেখানে পাঠিয়ে দেন হুন্ডিতে। আর সেই টাকা ‘রেমিট্যান্স’ হয়ে আবার চলে আসে আবু বকরের কাছে।
আবু বকরের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুদকে তদবির বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা ছিলেন আবু বকর। ছিলেন দুর্নীতিবাজদের রক্ষক। দুর্নীতিবাজদের সব সমস্যার ‘মুশকিল আসান’ ছিলেন তিনি। টাকা নিয়ে দুদকের মামলার দায়মুক্তি পেতে সহায়তার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির চিঠি ইস্যু করে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করতেন এই কর্মকর্তা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অবসরে যাওয়ার আগে তার সর্বশেষ বেতন ছিল সর্বোচ্চ ৫০-৬০ হাজার টাকা। অথচ তার সম্পদের ফিরিস্তি দেখে খোদ দুদক কর্মকর্তাদেরও ভিরমি খাওয়ার উপক্রম।
রাজধানীর পূর্বাচলে আবু বকরের জমি থাকার তথ্য পেয়েছে কালবেলা। পূর্বাচলের ২৫ নম্বর সেক্টরে জয় বাংলা চত্বর সংলগ্ন ৫ কাঠা করে দুটি প্লটে ১০ কাঠা জমি আছে তার। সেখানেও বাড়ি নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া মুগদা বড় মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় একটি ডেভেলপার কোম্পানির মাধ্যমে আবু বকর তার জমিতে ১০ তলা ভবন তৈরি করছেন। সম্প্রতি সেখানে একজন ক্রেতা ফ্ল্যাট কিনতে যান। তিনি দুদক কর্মকর্তার ভবন শোনার পর ফ্ল্যাট না কিনে ফিরে আসেন। এর বাইরে রাজধানীর বনশ্রী, আফতাবনগর, উত্তর বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে ডজন খানেক ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে। নিজ জেলা জামালপুরেও রয়েছে বিপুল সম্পদ।
এদিকে, ভাটারা থানাধীন নতুন বাজার এলাকায়ও আবু বকর সিদ্দিকীর একটি ১০ তলা আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের তথ্য নিশ্চিত হয়েছে কালবেলা। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভাটারার নতুন বাজার এলাকার ১০ তলার ভবনটিতে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ভবনটির নাম ‘মিয়া ভাই প্লাজা।’ ভবনের তৃতীয় তলায় পরিবার নিয়ে থাকেন আবু বকর সিদ্দিক। তিনি ভবনটির মালিক ও মালিক সমিতিরও সভাপতি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গত এপ্রিলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৮ সালে মামলা করে দুদক। সেই মামলা থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক আবু বকরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় আবু বকর তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করার কথা জানিয়ে ৬০ লাখ টাকা দাবি করেন। তিনি নগদ টাকা নিয়ে বাসায় গেলে ওই টাকা ডলারে কনভার্ট করে দিতে বলেন। শামসুজ্জামান স্বীকারোক্তিতে বলেন, আবু বকরকে ৩০ লাখ টাকার সমপরিমাণ ডলার দেন। এতে বদলে যায় তদন্ত কর্মকর্তা। শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে থাকা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় দুদকের উপপরিচালক গোলাম মাওলাকে। এই কর্মকর্তাও বিভিন্ন সময় শামসুজ্জামান ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন। টাকা পেয়ে গোলাম মাওলা তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশসহ কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত আরও কয়েকজন কর্মকর্তাও এ ধরনের তথ্য জানিয়েছেন।