নিজস্ব প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ভারতের আচরণ পক্ষপাতদুষ্ট, অগ্রহণযোগ্য। ভারত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারছে না। হাসিনার নির্দেশে ২৪'র গণ-অভ্যুত্থানে দুই হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ভারত তখন কোনো প্রতিবাদ বা উদ্বেগ জানায়নি। অথচ ভারত ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ অনেক গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়েছে। শুধু তাই না ভারত কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ভারত এখন বাংলাদেশি ক্রিমিনালদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির ৩ সংগঠন - যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আয়োজনে ‘ঢাকা টু আগরতলা’ লংমার্চ কর্মসূচি পালন শেষে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত দলীয় কার্যালয় থেকে আজ ১১ ডিসেম্বর, বুধবার, সকাল ৮টায় এই লংমার্চ কর্মসূচি শুরু হয়ে আখাউড়া সীমান্তে গিয়ে এই কর্মসূচি শেষ হয়।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকা অবমাননা, ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্য সন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনগুলো।
যুবদল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ‘ভারতের হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির একদল উচ্ছৃঙ্খল গোষ্ঠী হামলা চালিয়ে তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছে, মিশনের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। তখন ভারতের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নীরব ভূমিকায় ছিল, যা এ ঘটনার পেছনে তাদের মৌনসম্মতিকে ইঙ্গিত করে। ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ভারত সরকার কূটনীতিকদের সুরক্ষা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও ২৮ নভেম্বরে কলকাতায়ও একই ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সহিংস হামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাতের শামিল। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথা বলে একদিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অবমাননা করেছেন এবং অন্যদিকে আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নুরুল ইসলাম নয়ন আরও বলেন, বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার, তদন্ত এবং বিচার সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু ভারতের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত মন্তব্য করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। চিন্ময় দাসের অনুসারীদের হাতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ খুন হওয়ার পরেও বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ গভীর সংযম দেখিয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন। অন্যদিকে ভারত তার নিজের দেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ। সুতরাং ভারতের কোনো নৈতিক অধিকার নাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলার।
লংমার্চ পরবর্তী সমাবেশে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের লক্ষাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।